আঁধার রাত। আকাশে ক্ষণে ক্ষণে বিজলী চমকাচ্ছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। গ্রামের মেঠো পথ ভিজে পিচ্ছিল।নিজের ভারসাম্য রক্ষা করে রাস্তায় পথচলা বেশ কষ্টের । তবু এই ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুইজন মানুষ পথ চলছে। এদের একজন বয়স্ক অন্যজন নেহায়েত বাচ্চা । বয়স্কজন মাথায় ছাতা ধরে আছে, পরনের লুঙ্গী গুটিয়ে হাঁটু পর্যন্ত তোলা। মাথার ছাতা আসলে কোন কাজে আসছে না । তেরছাভাবে বৃষ্টিপাতের ফলে নিজেকে তো রক্ষা করতে পারছে না , সাথের ছেলেটিকে ও নয়। তাদের সামান্য সামনে একটি রিক্সা । সেই রিক্সায় একজন যাত্রী আছে । রিক্সাওয়ালা ও পায়ে হেঁটে রিক্সা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় দুইজনের মাঝে ছেলেটি প্রশ্ন করল
‘বাবা নানার বাড়ি আর কতদূর’?
‘এইতো বাপ আর বেশীদূর না’।
‘নানা কখন মারা গেছে বাবা’।
‘আজ দুপুরের পর কোন একসময়, আমি অফিসে ছিলাম , তোর মামা এসে বলেছে’।
‘হুম, আম্মুকে বলেছ’?
‘না , বলিনি তবে তোর আম্মু মনে হয় বুঝতে পেরেছে, দেখছিস না মাঝে মাঝে রিক্সা থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে’।
‘হ্যাঁ , শুনতে পাচ্ছি।বাবা নানুভাইকে কি কবর দিয়ে ফেলেছে’?
‘না এখন ও দেয়নি, আমরা যাবার পর দেবে’।
‘আচ্ছা বাবা তোমার কি মন খারাপ করছে, তোমার চোখে জল দেখছি’।
‘না ও কিছু না , মনে হয় বৃষ্টির ছটা পড়েছে’।
অনেকদিন পর বাবার সাথে এভাবে পথ চলছে অন্তু।অন্তুর বাবা ব্যাংকে চাকুরী করে তাই বাবা ছেলের মাঝে সপ্তাহে শুক্রবারের দিন ছাড়া সাক্ষাত হয়না।অন্তুর বাবার নাম আহমেদ।তিনি একটা বেসরকারী ব্যাংকে হিসাবরক্ষক হিসাবে কাজ করেন। বৃহস্পতি বার ছুটির দিনে তিনি পরিবারকে সময় দিতে পারেন । বাকি সময়টা অফিসের ব্যাস্তময় কাজের মধ্যে দিয়ে পার করেন। শুক্রবারের দিনটি অন্তুর কাছে অনেক স্বপ্নের ।বাবার সাথে ক্রিকেট খেলা , বাজারের হোটেলে বসে গরম গরম পরোটা সাথে গরুর মাংসের নেহারী।এরপর এটা সেটা কিনে দেওয়ার আবদার। বাড়িতে ফিরে মায়ের হাতের স্পেশাল রান্না সেই সাথে হইহুল্লোড় সব মিলিয়ে অনাবিল সুখ আর ব্যাস্ততাময় একটি দিন তাদের পরিবারের সকলের জন্য।
পরিবার বলতে অন্তু আর তার ছোট ভাই রকিব, একমাত্র বোন বহ্নি আর তাদের মা রুশু,আর আহমেদ সাহেব। সুন্দর মিষ্টি সংসার। সংসারের প্রান কর্তা ব্যাক্তি আহমেদ। অন্তুর মা থেকে শুরু করে সকলেই আহমেদ সাহেবকে সমীহ এবং শ্রদ্ধা করে। আহমেদ সাহেব। রাশভারী মানুষ কথা কম বলেন তবে অন্য আট দশজন মানুষ থেকে তিনি আলাদা। তিনি চলতি সময়ের বিশ্বের সকল খবর রাখেন। সেই কারনে অফিসের বড় কর্তারা অনেক সময়ে কিছু না জানলে আহমেদ সাহেবের শরণাপন্ন হন। আহমেদ সাহেব হাসিমুখে তাদের সমস্যার সমাধান করে দেন। আহমেদ সাহেব একজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। তিনি নিজে প্রচুর বই পড়েন। তার দেখাদেখি তার বড় ছেলে অন্তু ও ক্লাসের বই ছাড়া ও অনেক বই পড়ে। আহমেদ সাহেব ছেলের উৎসাহ দেখে মনে মনে খুশি কিন্তু খুব সহজে তা তিনি মুখে প্রকাশ করেননা। আহমেদ সাহেব এলাকায় নিজের জায়গায় ছোট একটি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন। সেখানে নিজের কেনা বিভিন্ন বিষয়ের বই তিনি রেখেছেন এলাকার জ্ঞান পিপাসু মানুষের জন্য। গ্রামের এই লাইব্রেরি তে তিনি একটি দৈনিক পত্রিকার ও ব্যাবস্থা করেছেন। আহমেদ সাহেবের বড় ভাইয়েরা এইজন্য আহমেদ সাহেব কে অনেক কথা বলেন । আহমেদ সাহেব এসব কথায় কান দেননা।
অন্তু বাবাকে খুব ভালোবাসে । কিন্তু বাবার সামনে গেলে ভয়ে চুপসে যায়। কিন্তু তার বাবা চায় ছেলের সাথে সহজ হতে।কিন্তু সম্পর্কের অন্যরকম একটা দেয়াল দুইজনের সামনে আর দশটা বাবা ছেলের সম্পর্কের মত অনায়াসেই দাড়িয়ে যায়। অন্তু জানে তার বাবা আর আট দশটা বাবার মত নয়। বাবা তাকে যেমন শাসন করে তেমনি অনেক বিষয়ে বন্ধুর মত চলার চেষ্টা করেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আহমেদ সাহেব পাড়ার মাঠে সকলের সাথে মিলে ক্রিকেট খেলেন। সকালে ছেলে অন্তুকে নিয়ে মর্নিং ওয়ার্ক করেন। অন্তু’র কাছে তখন পৃথিবীটা অন্যরকম লাগে। ইচ্ছে করে বাবা’কে বলতে বাবা তুমি সবসময়ের জন্য আমার সাথে থেকে যাও ।কিন্তু সে কথা কখন অ বলা হয়না অন্তুর।
একদিন রাস্তায় পাড়ার ছেলেরা তাস খেলছিল , অন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই খেলা দেখছিল। অন্তুর বাবা রাস্তা দিয়ে যাবার সময় অন্তুকে সেখানে দেখতে পায়। তিনি অন্তুকে সেখানে কিছু বললেন না ।কিন্তু অন্তু বাড়ি ফিরে এলে তিনি অন্তু’কে বেদম প্রহার করেন। সেই সাথে বলতে থাকেন
‘আমি তোকে জন্ম দিয়েছি পাড়ায় আমার বদনাম করার জন্য নয়, এসব তাস(জুয়া) যারা খেলে তারা সমাজের কাছে সবসময়য়ে খারাপ লোক বলে বিবেচিত হয়’।
সেই মার খেয়ে রাতের বেলা অন্তুর প্রচন্ড জ্বর হয়। অন্তু’কে তার বাবা রাতে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় কোলে করে সেই রাত ও ছিল ঝড় বাদলের । নিমিষেই অন্তু বাবার মারের কথা ভুলে যায়। বাবার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হবার ইচ্ছে জাগে । সেদিন অনেক রাত পর্যন্ত জেগে অন্তুর বাবা অন্তুকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে। রাতে অন্তুর ঘুম লেগে এলে বাবার কান্না শুনতে পায় অন্তু। কিন্তু ইচ্ছে করে আর জাগেনি , বাবার মমতা আর ভালোবাসার কাছে নিজেকে সেই রাত্রে সঁপে দেয়।মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে সমাজে ভালো ছেলে হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবে, যাতে করে বাবাকে তার জন্য কোন অপবাদ সইতে না হয়।
২
বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে অন্তু এবং তার বাবা মৃত বাড়িতে প্রবেশ করেন। অন্তুর মা রিকশা থেকে নেমে চিৎকার দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে উনার মৃত বাপকে দেখতে পান সাদা কাপনে খাটিয়ার উপর। গগন বিদারী কান্নায় পুরো পাড়া আরো একবার চুপ হয়ে যায় । অন্তুর খালামনিরা তার আম্মুকে পেয়ে পুনরায় শোকে মেতে উঠেন। অন্তুর কাছে এই দৃশ্য একেবারে অপরিচিত। অন্তুকে জড়িয়ে ধরে যখন তার আম্মু এবং খালামনিরা কাঁদতে লাগল তখন তাদের কান্নার প্রভাবে অন্তুর চোখে ও জল এসে গেল।
অন্যদিকে অন্তুর হাসিখুশি বাবার চোখ রক্তবর্ণ হয়ে আছে। অন্তুর বাবা তার নানার খাটিয়ার পাশে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে। সেই সময় ঘরের ভেতর অন্তুর আম্মু তার নানা সৃতি স্মরণ করে কেঁদে চলছে । কারো সান্ত্বনা বানী তাকে থামিয়ে রাখতে পারছে না । অন্তু তার আম্মুর অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করল। কিন্তু তার বোধগম্য হলনা। শুধু মনে হতে লাগল, অন্তু যেমন তার বা্বাকে ভালোবাসে তার আম্মু ও বোধহয় নানুভাইকে তেমি ভালোবাসে।
অন্তুর নানার মৃত্যতে অন্তু সবচেয়ে বড় আঘাত পেল যখন তার নানু ভাইকে দাফন করা হল। অন্তু তখন তার বাবাকে জিগ্যেস করল
‘বাবা নানু ভাই কি আর আমাদের মাঝে ফিরে আসবে না’।
‘না বাবা যে মরে যায় সে আর কখনো এই পৃথিবীতে আর ফিরে আসে না , তার আদেশ উপদেশ গুলো শুধু থাকে তার শরীর আর থাকে না । এই নিয়ম সবার জন্য’।
হঠাৎ করে অন্তু দেখতে পেল তার বাবা সকলের অগোচরে চোখের জল মুছছে।অন্তু দেখে ও না দেখার ভান করল। আজ নিজেকে কেমন যেন বড় মনে হচ্ছে না।যথাসময়ে অন্তুর নানার জানাজা হয়ে গেল। এরপর মসজিদের পার্শ্ববর্তি কবরস্থানে উনাকে দাফন করা হল। সকলে দোয়াদুরুদ পড়ে কবরে মাটি দিল। অন্তুর কাছে মনে হল এটাই সকলের শেষ ঠিকানা। অন্তুর বাবা অন্তুকে বলল
‘অন্তু এদিকে আস দেখ মানুষ মারা গেলে এভাবে দাফন করা হয়। এটা ইসলামিক নিয়ম, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ নানা নিয়মে এই কাজ করে, কেউ চিতায় আগুন জ্বালিয়ে শরীর ভস্ম করে, কেউ বাক্সে করে মাটির নিচে রাখে।কিন্তু আসল কথা হল মানুষের শরীর হল একটি মিডিয়া, মানুষের রুহ এই মিডিয়াতে যতদিন থাকে ততদিন এই শরীর স্বয়ংক্রিয় ভাবে সবকিছু করতে সক্ষম হয় । আর যখন সেই মিডিয়া থেকে রুহ চলে যায় তখন সব কিছু শুন্য, তখন আর এই শরীরের কোন মুল্য নেই’।
অন্তু বাবার সব কথা বুঝতে পারে না , কিন্তু বিস্ময় ভরা চোখে ফ্যালফ্যাল করে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে। অন্তুর মনে হচ্ছে তার বাবা আজ অন্যসকল দিনের চেয়ে যেন বেশী কথা বলছে।
বাড়ি ফিরে এসে দেখে নানুকে সাদা কাপড় পরানো হয়েছে, সেদিকে তাকিয়ে অন্তু আবারো বিস্মিত হয়।
৩
পরদিন মৃত বাড়ির নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে অতু এবং তার বাবা রওনা দেয় নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্য। আকাশে ঝলমলে আষাঢ়ের চাঁদ। রুপালী চাদরে যেন ঢেকে দিয়েছে চারপাশ। মাঝে মাঝে বয়ে যাচ্ছে ঠাণ্ডা বাতাস। অন্তু বাবার সাথে রিক্সায় বসে আছে। একসময় নীরবতা ভেঙ্গে অন্তুর বাবা অন্তুকে বলতে লাগল-
‘অন্তু আজ তোমাকে আমার জিবনের অনেক কথা বলব, তুমি মন দ্দিয়ে শুনবে , জীবনে হয়ত আর কোনদিন আজকের মত করে পাব না’।
অন্তু মাথা নেড়ে সায় দিল ।
একে একে অন্তুর বাবা বলে যেতে লাগল তার শৈশব জীবন থেকে শুরু করে সকল কাহীনি। অন্তুর কাছে এসব কথা একেবারে নতুন । তার বাবার প্রত্যেকটি কথা তাকে মুগ্ধ এবং মোহিত করতে লাগল। একসময় তার বাবা নিজের জীবনের প্রেমের কথা ও বলে গেল বিনা সংকোচে। অন্তু ভাবতে লাগল বাবা এসব বলছে কেন?
‘শোন আমার যদি কিছু হয়ে যায় তুমি অবশ্যই তোমার মা এবং ভাই বোনদের কে দেখে রাখবে।আজ তোমাকে এসব বলার উদ্দেশ্য হল , মানুষ মরণশীল । মানুষ কে একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়’।বলে আহমেদ সাহেব থামলেন।
গাঁয়ের কাচা রাস্তা দিয়ে রিকশা মন্থর গতিতে চলছে। অন্তুর কাছে অন্যরকম লাগছে। হঠাৎ তাকিয়ে দেখে তার বাবার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে।
‘কি হয়েছে বাবা ? তুমি কাঁদছ কেন’।
‘আরে কিছু না , চোখে পোকা পড়েছে বোধহয়’।
‘না বাবা তুমি কিছু লুকাচ্ছ’।
‘নারে কিছু না , আমি না থাকলে তুই পারবি তো সামলে নিতে’।
‘জানিনা বাবা,তুমি এমন কথা কেন বলছ’।
‘শোন বাবা অন্তু, আমি এখন এমন একটা কথা বলব , আশা করি তুমি ছাড়া আর কাউকে সেই কথাটি বলবে না ।আমার একটা মারাত্নক অসুখ হয়েছে, যা আমি কাউকে বলি নি । যে কোন দিন যে কোন সময়ে আমার মৃত্য হতে পারে । আর সেই কারনে আজ তোমাকে জীবনের অনেক কথা বলে হালকা হলাম’।
‘কি বলছ বাবা!আমি কিছুই বুঝতে পারছি না , কি অসুখ হয়েছে তোমার’।
‘আমার ক্যান্সার ধরা পড়েছে আজ মাস তিনিক হল’।
অন্তুর সামনে পুরো পৃথিবী অন্ধকার মনে হল। রাতের চাদের আলো অনেক বিষণ্ণ মনে হল । মাথা চক্কর মেরে উঠেছে । বাবাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল অন্তু। আহমেদ সাহেব ঢুকরে কেঁদে উঠলেন। অন্তুকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন বেশ শক্ত করে।
পরবর্তী কয়েকদিন অন্তুকে নানা জায়গায় নিয়ে গেলেন আহমেদ সাহেব। অনেকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কোথায় কি দেনা পাওনা আছে সব বুঝিয়ে দিলেন। ব্যাংকের বড় কর্তাকে সব খুলে বললেন। বড় কর্তা সকল বিষয়ে অন্তুকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। প্রতিদিন ঘরে ফিরে অন্তু নিজের রুমে বসে কাঁদে। অন্যদিকে আহমেদ সাহেব সকলের আড়ালে চোখের জল ফেলেন।
৪
অন্তু স্কুলে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময় একটি টেলিগ্রাফ নিয়ে এল কেউ একজন। তাতে লেখা ছিল
“Mrahmed in comilla hospital”
টেলিগ্রাফ পেয়ে অন্তুর মা কেঁদে কেটে অস্থির। অন্তুর আংকেল কে সাথে নিয়ে তার মা হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা দিলেন । অন্তুকে স্কুলে যেতে বারন করে বাড়িতে থাকতে বললেন। অন্তুর বুকতা ছ্যাঁত করে উঠল। সে বুঝে গেল কি হতে চলছে।
বিকাল পাঁচটার দিকে এ্যাম্বুলেন্সে করে আহমেদ সাহেবের মৃত দেহ নিয়ে আসা হল। অন্তুর মা পাথরের মূর্তির মত বসে রইল। তিনি এই মৃত্য কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। অন্তুর বোন বহ্নি এবং ছোট ভাই প্রথমে কিছু বুঝতে পারল না কিন্তু যখন দেখল তাদের বাবা বেঁচে নেই , তখন দুইজনে কাঁদতে লাগল। ঘরের বারান্দায় মায়ের পাশে গিয়ে বসল অন্তু। অন্তুকে দেখেই তার মায়ের কান্না শুরু হল। সে কান্নায় অন্তু ও মায়ের বুকে মুখ গুজে কেঁদে বুক ভাসাল।
যথারীতি দাফন কাফনের ব্যাবস্থা করা হল। আহমেদ সাহেবের জানাযায় অনেক মানুষ হল। সকলে আহমেদ সাহেবের পরিবারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে লাগল। অন্তু তখন আর কাদছিল না । তখন তার বার বার মনে হচ্ছিল বাবার কথা গুলো । যা আর কেউ জানেনা । জানে শুধু অন্তু আর তার মৃত বাবা।
অন্তু তার বাবাকে সকলের সাথে মিলে কবরে শুইয়ে দিয়ে মাটি দিয়ে বাড়ির দিকে আসতে লাগল। তার সামনে পড়ে আছে অচেনা এক ভবিষ্যৎ । ভাই বোনের দায়িত্ব , নিজের লেখাপড়া এবং সংসার। অন্তু মাথা তুলে আকাশের দিকে চাইল। আবছা ভাবে দেখতে ফেল তার বাবা তার দিকে চেয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে , যেন বলছে
‘হ্যাঁ বাবা তুই পারবি , আমি তো আছি। মানুষ মরে গেলে তার শরীর চলে যায়। তার আদেশ উপদেশ
অনন্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে অন্তু মনে মনে বলে উঠল
‘হ্যাঁ বাবা আমি পারব, আমাকে পারতেই হবে।তোমাকে দেওয়া ওয়াদা আমি পালন করব নিজের জীবন দিয়ে হলেও’।
বাড়ির সামনে তখন সাদা কাপড় পরে দাঁড়িয়ে আছে তার মা এবং ভাই বোন।তাদের দৃষ্টি কবরের দিকে , অন্তু তাদের মাঝে গিয়ে দাড়াল এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল।
তার বাবা হাসছে , তবে তার চোখের কোনে জল,যা তিনি লুকানোর চেষ্টা করছেন না।
১৯ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৫০ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪